পূর্বাভাস
পূর্বাভাস
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন দুনিয়ার সর্বশেষ নবী। অতএব তাহার পরে দুনিয়ায় আর কোন নবী আসিবেন না এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর প্রচারিত ইসলাম ধর্মই কিয়ামত পর্যন্ত প্রচলিত থাকিবে, ইহাই আল্লাহর বিধান।
একজন নবীর মৃত্যুর পরে ক্রমে ক্রমে তাঁহার প্রচারিত ধর্মে ভাটা পড়িয়া আসিবে এবং তাহার পরে আর একজন নবী আসিয়া সেই ধর্মকে পুনর্জীবিত করিবেন, ইহাই ছিল আল্লাহর পূর্বের বিধান, কিন্তু শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর ইনতিকালের সাথে সাথে নবুওতের দরজা বন্ধ হইয়া গিয়াছে। তথাপি স্বাভাবিকভাবে তাঁহার প্রচারিত ধর্মের মধ্যে ক্রমে শিথিলতা আসিতে থাকে। কেননা পাপাত্মা ইবলিস নিৰ্কীয় ও নিশ্চেষ্ট হইয়া বসিয়া নাই বরং তাহার প্রচারকার্য পূর্ণমাত্রায় চলিতেছে। পক্ষান্তরে অন্য কোন
সংস্কারকের আগমন না হওয়ায় মুসলিমদের মধ্যে ইসলামী চেতনা ক্রমেই ভাটা পড়িয়া আসিতেছিল এবং মানুষ শয়তানের প্ররােচনায় আল্লাহকে ভুলিয়া ক্রমেই পাপকার্যের দিকে ঝুঁকিয়া পড়িতেছিল।
এই অসুবিধা দূর করার উদ্দেশ্যে পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন সময় দুনিয়ার বিভিন্ন অংশে সত্যধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে তাঁহার কতিপয় প্রিয় বান্দার আবির্ভাব ঘটান। তাঁহারা নবী না হইলেও তাহাদের আচার-ব্যবহার, কথাবার্তা, চালচলন ও কার্যকলাপ অবিকল নবীদের মতই। আল্লাহর এইরূপ প্রিয় বান্দাদিগকে আল্লাহর ওলী বলাহয়।
নবী ব্যতীত অন্য কাহারও নূতন ধর্ম প্রচার করিবার ক্ষমতা ও অধিকার নাই এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর প্রচারিত ইসলাম ধর্মই কিয়ামত পর্যন্ত প্রচলিত থাকিবে, ইহাই আল্লাহর বিধান। সেইজন্য ওলীগণ কোন নূতন ধর্ম প্রচার না করিয়া হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর প্রচারিত ধর্মকেই পুনর্জীবিত করিয়া তুলিতে থাকেন।
হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ইতিকালের পর হইতে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে এইরূপ হাজার হাজার ওলী জন্মগ্রহণ করিয়াছেন যাঁহারা লক্ষ লক্ষ পথভ্রষ্ট মানবকে আল্লাহর পথে আনয়ন করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন।
মহানবী হযরত (সাঃ)-এর ইনতিকালের প্রায় চারিশত বৎসর পর ইসলামের এক ঘাের দুর্দিনে মৃতপ্রায় ইসলামী চেতনাকে পুনর্জীবন দান করার উদ্দেশ্যে পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলা একজন মহামানবের আবির্ভাব ঘটান। এই মহামানবের পুণ্যময় জীবন কাহিনীই এই গ্রন্থের প্রতিপাদ্য। তিনি গাওসুল আযম পীরানে পীর মুহিউদ্দীন মুহাম্মদ আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)।