ছাত্র জীবনে দুঃখ-কষ্ট
ছাত্র জীবনে দুঃখ-কষ্ট
হযরত বড় পীর সাহেব ছাত্র জীবনে বাগদাদে অবস্থান কালে বহু দুঃখকষ্ট ও অভাব অভিযােগের ভিতর দিয়া দিন অতিবাহিত করিতেছিলেন। মাতার দেওয়া যে চল্লিশটি দীনার তাঁহার নিকট ছিল, তাহা যদি তিনি শুধু নিজের জন্য একটু হিসাব করিয়া খরচ করিতেন, তবে উহার দ্বারা বেশ স্বচ্ছন্দে তাঁহার অনেক দিন চলিয়া যাইত। কিন্তু অতি অল্প দিনের মধ্যেই তাহা নিঃশেষ হইয়া গেল। কারণ, তাঁহার হৃদয় ছিল অত্যন্ত কোমল।
তিনি কাহারও দুঃখ-কষ্ট দেখিলে মােটেই স্থির থাকিতে পারিতেন না। যখনই তিনি কাহারও কোন অভাব দেখিতেন, তখনই তাহাকে কিছু দিয়া তাহার সেই অভাব মােচন করিয়া দিতেন। আর তাঁহার দানের পরিমাণ কখনই নগণ্য হইত না—অন্ততঃ তখনকার মত সেই লােকটির প্রয়ােজন মিটানাের উপযােগী দানই তিনি অবশ্যই করিতেন। ফলতঃ দানে ছিলেন তিনি একেবারে মুক্তহস্ত। এমনকি দান করার সময় তাঁহার নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা তাে দূরের কথা, উপস্থিত প্রয়ােজনের কথাটাও তিনি ভুলিয়া যাইতেন।
বাগদাদে আগমন করার কিছু দিন পরেই তিনি অর্থাভাবে চতুর্দিক অন্ধকার দেখিতে লাগিলেন। এই সম্বন্ধে তিনি নিজেই বলিয়াছেন—এক সময়ে আমি কোন খাদ্যের সংস্থান করিতে না পারিয়া একাদিক্রমে বিশ দিন সম্পূর্ণ অনাহারে ছিলাম। অতঃপর একদিন খাদ্যের চেষ্টা করিতে প্রাচীনকালের পারস্য সম্রাটদের ভগ্ন ও বিধ্বস্ত জনশূন্য প্রাসাদের দিকে গমন করিলাম। আমি সেখানে যাইয়া দেখিতে পাইলাম যে, সেখানে আমার মত সত্তরজন দরবেশ লােক খাদ্যের সন্ধান করিতেছিলেন। আমার উপস্থিতিতে তাহাদের কোন রূপ অসুবিধার সৃষ্টি হইতে পারে, মনে করিয়া আমি তৎক্ষণাৎ সেখান হইতে চলিয়া আসিলাম।