গিরি দূর্গে বন্দী হযরত আবুবকর (রাঃ)
গিরি দূর্গে বন্দী হযরত আবুবকর (রাঃ)
শেব বা আবু তালিব নামক গিরি দুর্গটি পূর্ব হতেই বনি হাশিম গোত্রের অধীনে ছিল। অত্যাচারের মাত্রা এতদূর ঊর্ধ্বে উঠল, স্বয়ং মহানবীই একটি বিকল্প চিন্তা করতে বাধ্য হলেন। তিনি মনে মনে স্থির করলেন-শেব গিরি দুর্গে তাঁর আপন লোকজনদের নিয়ে কিছুটা শান্তিতে থাকবেন । মহানবী আপনজনদের নিয়ে গিরি দুর্গে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোরাইশগণ মহানবীকে সদলবলে এক ঘরে করলেন। কোরাইশগণ সমস্ত রকমের সামাজিক সম্পর্ক ও লেনদেন, ক্রয়-বিক্রয় যাবতীয় জিনিস বন্ধ করে দিল। সঙ্গে আবুবকর (রাঃ)-ও তাঁর পরিবার- পরিজনগণ। অবস্থা এমনি ভয়াবহ রূপ ধারণ করল দিনের পর দিন সকলকে অনাহারে কাটাতে হতো। গাছের পাতা, শুকনো চামড়া প্রভৃতি খেয়ে দিন কাটাতে থাকল । শিশুরা ক্ষুধার জ্বালায় চিৎকার করতে থাকে। সকলেরই যেন সহ্যের বাঁধ আজ ভেঙ্গে যাচ্ছে। হেনকালে আবুবকর (রাঃ)-এর নেতৃত্বে কিছু কোরাইশ বৃদ্ধের মন ও হৃদয় বিগলিত হল। তাঁরা ছিলেন মুতিম বিন আদি, আবুল বখতারি ইবনে হাশিম, জামাহ বিন আসওয়াদ, হাশিম বিন আমর এবং জুহাইর বিন উমাইয়া। আবুবকর (রাঃ)-এর মাধ্যমে এঁদের প্রচেষ্টায় মহানবী আবার সদলবলে বন্দীমুক্ত হলেন। এই সময়টা মহানবী ও আবুবকর (রাঃ)-কে কি অসহনীয় দৈহিক ও মানসিক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল তা বর্ণনাতীত। এই মহা দুর্দিনে মহানবীর পাশে ইসলাম প্রচারের প্রধান সহায়ক ও প্রধান পরামর্শদাতা রূপে যিনি ছিলেন, তিনিই আবুবকর (রাঃ)। নিঃস্ব জীবনে শুধু নৈতিক বল তোমাকে পাহাড় হতেও করেছে সবল । বিরামহীন অত্যাচারে ওষ্ঠাগত প্রাণ এক আল্লাহ্ অদ্বিতীয়ের করিছে জয়গান।