আঠার পারা কুরআনের হাফেজ
আঠার পারা কুরআনের হাফেজ
আঠার পারা কুরআনের হাফেজ – হযরত বড় পীর (রঃ)-এর বহুসংখ্যক কারামতের কাহিনী লােকমুখে প্রচলিত এবং সেই সূত্রে কিতাবাদিতেও বর্ণিত রহিয়াছে। তাঁহার সর্বশ্রেষ্ঠ কারামতের বর্ণনা নিম্নরূপঃ
হযরত বড় পীর সাহেব মাদ্রাসায় গমন করার পর ওস্তাদ সাহেব যখন সর্বপ্রথম তাঁহাকে সবক দেওয়ার জন্য বলিলেন—পড় “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ তখন বালক আবদুল কাদের বিসমিল্লাহ ও সূরা ফাতেহা পাঠ করিয়া পবিত্র কুরআনের প্রথম পারা হইতে পাঠ করিতে আরম্ভ করিলেন। ওস্তাদ সাহেব তাঁহাকে বাধা না দিয়া ধৈর্যের সহিত নীরবে কুরআন পাঠ শুনিতে লাগিলেন।
বালক আবদুল কাদের কুরআন শরীফের প্রথম হইতে আরম্ভ করিয়া আঠার পারা পর্যন্ত পড়িয়া থামিয়া গেলেন। ওস্তাদজী বলিলেন—থামিলে কেন? পড়িয়া যাও। তিনি উত্তর করিলেন আর পড়িতে জানি না, আমি এই পর্যন্ত মুখস্থ করিয়াছি।
ওস্তাদজী জিজ্ঞাসা করিলেন—তুমি এই পর্যন্ত কাহার নিকট হইতে মুখস্থ করিয়াছ? তিনি উত্তর করিলেন—কাহারও নিকট হইতে মুখস্থ করি নাই—আমার আমার এই পর্যন্ত মুখস্ত আছে। আমি আমার মায়ের উদরে থাকিতে তিনি সর্বদাই এই পর্যন্ত মুখস্থ পাঠ করিতেন, তাই আমি মায়ের উদরে থাকিতেই এই পর্যন্ত মুখস্থ করিয়াছিলাম। এই সম্পর্কে কোন কোন কিতাবে এইরূপও বর্ণিত আছে যে, হযরত বড় পীর সাহেবের স্মরণশক্তি অত্যন্ত প্রখর ছিল, তিনি যাহা একবার মাত্র শুনিতেন তাহাই অবিকল মুখস্থ বলিতে পারিতেন। তাঁহার মাতা পবিত্র কুরআনের আঠার পারার হাফেজ ছিলেন। প্রত্যহ রাত্রিতে তিনি শিশুকে কোলে লইয়া ঐ আঠার পারা একবার করিয়া পাঠ করিতেন, তাহাতে তিনি মায়ের কোলে থাকিয়াই আঠার পারা মুখস্থ শিক্ষা করিয়াছিলেন।
হযরত বড় পীর সাহেব মাদ্রাসায় গমন করার প্রথম দিনের ঘটনা হইতেই মাদ্রাসার যাবতীয় ছাত্র তাঁহাকে সম্মান করিতে থাকে এবং যতদিন তিনি ঐ মাদ্রাসায় ছিলেন, ততদিন মাদ্রাসার প্রত্যেকটি ছাত্র তাঁহাকে অশেষ সম্মান করিয়া চলিত । ছাত্রগণ কোনদিনই তাঁহার সহিত কোনরূপ বেআদবী বা অসদাচরণ করে নাই। মাদ্রাসার শিক্ষকগণও সকলেই বুঝিতে পারিয়াছিলেন যে, এই বালক বড় হইয়া একজন মহাপুরুষ হইবেন।